বিক্ষেপ চিত্র ও বিক্ষেপ চিত্রের সাহায্যে দুটি চলকের সংশ্লেষের ব্যাখ্যা

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - পরিসংখ্যান - পরিসংখ্যান ১ম পত্র | | NCTB BOOK
7
7

বিক্ষেপ চিত্র (Scatter Plot)

সংজ্ঞা:
বিক্ষেপ চিত্র হলো দ্বি-চলক ডেটা উপস্থাপনের একটি গ্রাফিক্যাল পদ্ধতি, যেখানে প্রতিটি ডেটা বিন্দু একটি চলকের (Independent Variable) মান এবং অপর চলকের (Dependent Variable) মানের সমন্বয় হিসেবে প্রদর্শিত হয়। এটি চলকগুলোর মধ্যকার সম্পর্কের ধরন (ধনাত্মক, ঋণাত্মক, বা শূন্য) বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।


বিক্ষেপ চিত্রের মূল বৈশিষ্ট্য

১. গ্রাফের উপাদান:

  • X-অক্ষ: স্বাধীন চলক (Independent Variable)।
  • Y-অক্ষ: নির্ভরশীল চলক (Dependent Variable)।

২. বিন্দুসমূহ:
প্রতিটি বিন্দু একটি নির্দিষ্ট X এবং Yমানের প্রতিনিধিত্ব করে।

৩. সম্পর্কের ধরন:

  • ধনাত্মক সম্পর্ক: বিন্দুগুলো একটি ঊর্ধ্বমুখী প্যাটার্ন অনুসরণ করে।
  • ঋণাত্মক সম্পর্ক: বিন্দুগুলো একটি নিম্নমুখী প্যাটার্ন অনুসরণ করে।
  • শূন্য সম্পর্ক: বিন্দুগুলো এলোমেলোভাবে ছড়ানো থাকে, কোনো নির্দিষ্ট প্যাটার্ন থাকে না।

বিক্ষেপ চিত্রের সাহায্যে সংশ্লেষের ব্যাখ্যা

১. ধনাত্মক সংশ্লেষ (Positive Correlation):

যদি বিক্ষেপ চিত্রের বিন্দুগুলো একটি ঊর্ধ্বমুখী রেখা বা প্রবণতা দেখায়, তাহলে এটি ধনাত্মক সংশ্লেষ নির্দেশ করে।
উদাহরণ:
একটি ছাত্রের পড়ার সময় বাড়লে পরীক্ষার নম্বর বৃদ্ধি পাওয়া।
বিক্ষেপ চিত্রে X (পড়ার সময়) বৃদ্ধি পেলে Y(পরীক্ষার নম্বর) ও বৃদ্ধি পায়।


২. ঋণাত্মক সংশ্লেষ (Negative Correlation):

যদি বিক্ষেপ চিত্রের বিন্দুগুলো একটি নিম্নমুখী রেখা বা প্রবণতা দেখায়, তাহলে এটি ঋণাত্মক সংশ্লেষ নির্দেশ করে।
উদাহরণ:
পণ্যের দাম বাড়লে বিক্রয় কমে যায়।
বিক্ষেপ চিত্রে X(মূল্য) বৃদ্ধি পেলে Y (বিক্রয়) হ্রাস পায়।


৩. শূন্য সংশ্লেষ (No Correlation):

যদি বিক্ষেপ চিত্রে বিন্দুগুলো এলোমেলোভাবে ছড়ানো থাকে এবং কোনো নির্দিষ্ট প্যাটার্ন না দেখা যায়, তাহলে এটি শূন্য সংশ্লেষ নির্দেশ করে।
উদাহরণ:
একটি ছাত্রের পছন্দের খাবার এবং তার পরীক্ষার নম্বরের মধ্যে সম্পর্ক।


বিক্ষেপ চিত্রের সাহায্যে সংশ্লেষ নির্ণয়ের গুরুত্ব

১. দৃষ্টিগ্রাহ্য বিশ্লেষণ:
বিক্ষেপ চিত্র চলকগুলোর সম্পর্ক সহজেই চিত্রায়িত করে এবং সংশ্লেষের প্রাথমিক ধারণা প্রদান করে।

২. সম্পর্কের প্রকৃতি:
এটি চলকগুলোর সম্পর্কের ধরণ (ধনাত্মক, ঋণাত্মক বা শূন্য) নির্ধারণ করতে সহায়ক।

  1. ব্যতিক্রমী মান (Outliers):
    বিক্ষেপ চিত্রে সহজেই ব্যতিক্রমী বা অস্বাভাবিক মান শনাক্ত করা যায়।
  2. ভবিষ্যদ্বাণী ও মডেলিং:
    বিক্ষেপ চিত্র চলকগুলোর সম্পর্ক বোঝার মাধ্যমে ভবিষ্যদ্বাণীর জন্য নির্ভরণ (Regression) মডেল তৈরিতে সহায়তা করে।

উদাহরণ

একটি কোম্পানির বিজ্ঞাপনের খরচ (X) এবং বিক্রয় (Y) এর ডেটা:

X = [10, 20, 30, 40, 50], Y = [15, 25, 35, 45, 55]

বিক্ষেপ চিত্রে বিন্দুগুলো ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় এটি একটি ধনাত্মক সম্পর্ক নির্দেশ করে। বিজ্ঞাপনের খরচ বাড়ানোর সাথে সাথে বিক্রয় বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এভাবে বিক্ষেপ চিত্র চলকগুলোর সম্পর্ক বিশ্লেষণ এবং ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক।

Content added By
Promotion